Globe Securities Ltd. | Post Details ;
18 Sep

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের পদ্ধতিঃ পর্ব-০১

সচেতন বিনিয়োগকারীর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বিনিয়োগ সম্পর্কিত বিষয়ে সে যা শুনবে, জানবে তা যাচাই করে সেইসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তাই তথ্য নিয়ে মার্কেটে সরাসরি এসে বিনিয়োগপূর্ব যাচাই বাছাই অর্থাৎ সার্ভে করার কাজ আপনাকে করতে হবে।

আমরা যখন জমি, ফ্ল্যাট, স্বর্ণ কিনি বা এগুলোতে বিনিয়োগ করি তখন এদের বর্তমান মার্কেট দাম, ভবিষ্যতে দাম কেমন হতে পারে, ঝামেলাবিহীন কিনা এইসব বিষয়ে বেশ ভালভাবেই সময় নিয়ে খোঁজখবর বা সার্ভে করি। এমনকি ব্যাংকে FDR করতে গিয়েও কোন ব্যাংক বেশি ইন্টারেস্ট দেয় সেইটা যাচাই করি। শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করার পূর্বেও আমাদের এইরকম সার্ভে করতে হবে।

শুধুমাত্র অঢেল টাকা থাকলেই বা অমুকের পরিচিত তমুক শেয়ার ব্যবসায় ভালো করছে দেখে সামান্য খোঁজখবর নিয়ে আসলে হবে না। কিভাবে সার্ভে করবেন?  আপনিই নিজ থেকে সার্ভে করবেন!!! কিভাবে সার্ভে করবেন সেই রাস্তাও দেখিয়ে দিচ্ছি।

বর্তমান বিনিয়োগকারীদের সাথে কথা বলাঃ 


এই সার্ভে করতে গিয়ে প্রথমেই আপনাকে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ আছে এমন লোকজনের সাথে আলাপ করতে হবে। আপনি কমপক্ষে ১০ জন বিভিন্ন শ্রেণীর বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপ করতে পারেন, সর্বোচ্চ ২০ জন। এর থেকে বেশি মানুষের সাথে আলাপ করতে গেলে কি রেখে কি করি এই অবস্থায় পড়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। কথায় আছে “অধিক সন্ন্যাসীতে গাঁজন নষ্ট।’’ এখানে বিভিন্ন শ্রেণির বিনিয়োগকারী বলতে বিভিন্ন পুঁজির বিনিয়োগকারীদেরকে বুঝানো হয়েছে।

কাদের সাথে আলাপ করবেন? ধরুন, সর্বনিম্ন ২ লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ আছে এমন বিনিয়োগকারীদের সাথে আলাপ করবেন। হতে পারে আপনি যাদের সাথে আলাপ করছেন তাঁদের অধিকাংশই প্রাইমারী (আইপিও) শেয়ার ব্যবসায়ের সাথে জড়িত অথবা সেকেন্ডারি।

তাঁদের সাথে কথা বলার ফলে আপনি এই ব্যবসার প্রাথমিক খুঁটি-নাটি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। একেক জনের কাছ থেকে একই তথ্য বিভিন্নভাবে পেতে পারেন। যেসব তথ্যের প্রতি সন্দেহ হবে সেগুলো মার্ক করে সেগুলোর সঠিক তথ্য পাবার জন্য DSE Website, Globe Securities Ltd. Website, Globe Securities Facebook Page, Globe Investors Club এর সাহায্য নিতে পারেন।

এছাড়া তাঁরা কিভাবে বিনিয়োগ করছেন, কোন মেয়াদে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন, তাঁদের বিনিয়োগ কৌশল ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন এবং একই সাথে তাঁরা কি কি ভুল করেছেন, করছেন সেইগুলোও জেনে নিন।

ব্রোকারেজ হাউজ সম্পর্কে জানা: 
প্রাইমারি (আইপিও) অথবা সেকেন্ডারি যেই ধরণের শেয়ার ব্যবসায়ের সাথেই জড়িত হোন না কেন ব্যবসা করার জন্য আপনাকে ব্রোকার হাউসে বি.ও. একাউন্ট করতে হবে। একাউন্ট করার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে সেটা জানার আগে কোন ব্রোকারে একাউন্ট করবেন সেটা নিয়ে আগে ভাবুন।

ব্রোকার পছন্দ করার আগে দেখে নিন ব্রোকারটির টপ ম্যানেজমেন্টে কারা আছেন, ব্রোকারটি দ্রুততম সময়ে লেনদেন করতে পারে কিনা, শেয়ারের লেনদেনের চার্জ কত, অনলাইনে বা ফোনে ট্রেড করা যায় কিনা, নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে কিনা, পুঁজির নিরাপত্তা কেমন ইত্যাদি।

ব্যক্তিগত রিপোর্ট তৈরি করা: 
এবার আপনার কাজ হল বাসায় বসে নিজের জন্য রিপোর্ট তৈরি করা। অবশ্যই ছুটির দিনে শান্ত পরিবেশে কাগজ, কলম, ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন সাথে নিয়ে বসে পড়ুন। এই যে কয়েকটা দিন কষ্ট করে বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারীর সাথে কথা বললেন এবং কয়েকটি ব্রোকার সম্পর্কে খোঁজখবর নেবার পর যে তথ্যগুলো পেলেন তা একসাথে করুন।

আপনার সাথে আলাপকৃত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে যে তথ্য পেলেন তা থেকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীর সংখ্যার শতকরা হিসাব বের করুন, প্রত্যেকের পুঁজি কত, পুঁজির বিপরীতে লাভ ও লসের শতকরা পরিমাণ, কত বছর ধরে স্টক মার্কেটে আছেন এবং সেই অনুযায়ী প্রতি বছর তাঁদের নীট লাভ/লসের পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়গুলো সুন্দরভাবে সাজিয়ে নিন।

এবার আসুন ব্রোকারেজ হাউজ সিলেক্ট এর ব্যাপারে। আগেই বলে ফেলেছি কি কি বিষয় সম্পর্কে খোঁজ-খবর করবেন। ব্রোকারেজ হাউজ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সংগ্রহ করে ফেলেছেন। এবার আপনার কাজ হচ্ছে সেই তথ্যগুলো ক্যাটাগরিতে ভাগ করে তালিকা বানান। যেমন একটা ক্যাটাগরি হল ব্রোকার কমিশন। এভাবে, বিভিন্ন ব্রোকারের সার্ভিসের তুলনামূলক তথ্য লিপিবদ্ধ করুন।

এই রিপোর্টে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি শেয়ার ব্যবসার সুবিধা, অসুবিধাও তুলে রাখুন।

এবার রিপোর্ট তৈরি শেষ হয়ে গেলে রিপোর্টের তথ্যগুলো দেখুন আর এর সাথে আপনার প্রাইমারি বিনিয়োগ কৌশল দেখুন। বাস্তবতার সাথে কতটুকু তফাৎ হচ্ছে, কোন বিষয়ে তফাৎটা হচ্ছে, এটার সমাধান আছে কিনা তা খুঁজে বের করে দেখুন।

যেকোনো বিনিয়োগের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হয় তা ব্যক্তিপর্যায়ে হোক আর প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে। আর এই পরিকল্পনা বিনিয়োগের সফলতা অর্জনের জন্য কতটুকু ফলপ্রসূ হবে তা রিপোর্টের মাধ্যমেই বোঝা যায়।

আরও বিস্তারিত সহযোগিতার জন্য গ্লোব সিকিউরিটিজ লিঃ এর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন। আমাদের কাস্টমার সার্ভিস নাম্বার- ০১৯১৩৫৩২০২১, ইমেইল ঠিকানা- support@globedse.com

Comments